মানুষের জীবন একটাই, সেবার মান নিয়ে কোনো ছাড় নয় : স্বাস্থ্যমন্ত্রী

স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রী ডা. সামন্ত লাল সেন বলেছেন, মানুষের জীবন একটাই। বেসরকারি ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারগুলোর সেবার মান নিয়ে কোনো ছাড় নয়। নিবন্ধিত হয়ে সব শর্ত পূরণ করে জনগণকে সঠিকভাবে সেবা দিতে হবে। সরকারি নিয়ম বহির্ভূতভাবে চললে তাদের প্রতিষ্ঠান বন্ধ করে দেয়া হবে।’

শনিবার (২৭ এপ্রিল) বিকেলে নড়াইল সদর হাসপাতালের আয়োজনে কনফারেন্স রুমে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রী ডা. সামন্ত লাল সেন মতবিনিময় সভায় এসব কথা বলেন।

মন্ত্রী বলেন, ‘নড়াইল ও লোহাগড়ায় দুইটি হাসপাতালের নবনির্মিত ভবন উদ্বোধন করলাম। আমি পেশায় একজন চিকিৎসক, এখানে এসে বুঝতে পেরেছি আপনাদের কোন কোন জিনিস প্রয়োজন। অবকাঠামোর খোলস দাঁড় করিয়ে রেখে তো লাভ নেই, সেটা যেন সেবা দানে উপযোগী হয় সেদিক থেকে সব সুযোগ সুবিধা নিশ্চিত করবো।’

তিনি আরও বলেন, ‘আমরা যারা আছি, এলাকার হাসপাতালে গিয়ে যদি একটু চেকআপও করাই তাতে সাধারণ মানুষ সরকারি হাসপাতালে আসতে উদ্বুদ্ধ হবেন।’

মাশরাফীকে নিজের সন্তানের মত উল্লেখ করে স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, ‘আমি ক্রিকেট পাগল মানুষ, তাই মাশরাফীর প্রতি ভালোলাগাটাও একটু অন্যরকম। সে কোনো জিনিস দাবি করলে সেটা দেয়া আমার দায়িত্ব। মাশরাফী তার জেলায় সরকারি হাসপাতালকে নিজের মনে করে ও জনগণের সেবা নিয়ে যতটা চিন্তা করে, আমি বিশ্বাস করি অন্য সংসদ সদস্যরা যদি এমন করতো চিকিৎসা সেবার অনেক উন্নতি হতো। একজন জনপ্রতিনিধিই জানেন তার এলাকায় স্বাস্থ্য সেবায় কোন জিনিস বেশি প্রয়োজন।’

ডা. সামন্ত লাল বলেন, ‘আমি টেলিভিশনে নাটক দেখছিলাম, একটি ফোনে মন্ত্রী হয়েছি। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জনগণের সেবা দেয়ার জন্য আমার ওপর যে আস্থা রেখেছেন, আমার সর্বোচ্চ দিয়ে দেশের চিকিৎসা খাতের উন্নয়ন করবো।’

এ সময় মন্ত্রী তার বক্তব্যে জেলা সিভিল সার্জনকে বেসরকারি স্বাস্থ্য খাতে ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারের সেবার মান নিশ্চিতে কঠোর নির্দেশনা দেন।

এর আগে স্বাস্থ্য সেবার মানোন্নয়নে নড়াইলে বহুল কাঙ্ক্ষিত ৫০ শয্যা বিমিষ্ট লোহাগড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের নবনির্মিত ভবন ও ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট সদর জেনারেল হাসপাতালের নবনির্মিত  ভবন দুইটি উদ্বোধন করেন স্বাস্থ্য মন্ত্রী ডা. সামন্ত লাল সেন। শনিবার বিকেলে প্রথমে লোহাগড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের ভবন ও পরে সদর হাসপাতালের ভবন উদ্বোধন করেন স্বাস্থ্য মন্ত্রী।

জানা যায়, ৫০ শয্যা বিশিষ্ট লোহাগড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের ৩১ শয্যা বিশিষ্ট পুনর্নির্মিত ভবনটি স্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদফতরের তত্বাবধানে ১০ কোটি ৭৫ লাখ টাকা চুক্তিমূল্যে ২০২০ সালের মার্চে শুরু হয়। দুই দফায় মেয়াদ বাড়িয়ে কাজ শেষ হয় গত বছরের মার্চে। এদিকে ১০০ শয্যা হতে ২৫০ শয্যায় উন্নীতকরণে ৩৪ কোটি ৪৯  লাখ ৮০ হাজার টাকা চুক্তিমূল্যে স্বাস্থ্য অধিদফতরের বাস্তবায়নে গণপূর্ত অধিদফতর কাজ শুরু করে ২০১৮ সালের জুন মাসে। চলতি বছরের জুনে ভবনটি হস্তান্তর করবে নির্মাণকারী প্রতিষ্ঠান।

বিকেলে নড়াইল সদর হাসপাতালের আয়োজনে কনফারেন্স রুমে স্বাস্থ্য মন্ত্রীর সঙ্গে এক মতবিনিময় সভায় উপস্থিত ছিলেন সংসদ হুইপ ও নড়াইল-২ আসনের সংসদ সদস্য মাশরাফী বিন মোর্ত্তজা, স্বাস্থ্য অধিদফতরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. আবুল বাসার মোহাম্মদ খুরশীদ আলম, অতিরিক্ত মহাপরিচালক ডা. মীরজাদী সেব্রিনা ফ্লোরাসহ জেলার বিভিন্ন দফতরের উচ্চ পদস্থ কর্মকর্তারা।





[টিবিএন৭১/আরএস]