কক্সবাজার সৈকতের সৌন্দর্যে বিমোহিত কবি নজরুল বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা

বিশ্বের দীর্ঘতম কক্সবাজার সমুদ্রসৈকতের অপার সৌন্দর্য দেখে অভিভূত, বিমোহিত ময়মনসিংহের কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা। 

বিশ্ববিদ্যালয়টির স্থানীয় সরকার ও নগর উন্নয়ন বিভাগের শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা কক্সবাজার ভ্রমণে এসে এই মুগ্ধতা প্রকাশ করেন। 

জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ের স্থানীয় সরকার ও নগর উন্নয়ন বিভাগের বিভাগীয় প্রধান অধ্যাপক মো. রাকিবুল ইসলাম তাঁর প্রতিক্রিয়ায় বলেন, 'প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের লীলাভূমি বাংলাদেশে রয়েছে হাজারও পর্যটন কেন্দ্র। তবে নদীমাতৃক এই দেশে নদী পাড়ের সৌন্দর্য উপভোগ করতে মানুষ ভালোবাসে। কিন্তু যদি হয় সমুদ্রসৈকত, তাহলে তো কোনো কথাই নেই। আর এই সমুদ্রসৈকতের সৌন্দর্য দেখতে এসেছি ময়মনসিংহের জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ের স্থানীয় সরকার ও নগর উন্নয়ন বিভাগের চতুর্থ ব্যাচের শিক্ষার্থীদের নিয়ে'।

জানা যায়, বিশ্ববিদ্যালয়ের নজরুল ভাস্কর্য সংলগ্ন থেকে শিক্ষার্থীরা বাসে করে কক্সবাজারের উদ্দেশ্যে রওনা দেয়। স্থানীয় সরকার ও নগর উন্নয়ন বিভাগের বিভাগীয় প্রধান ও সহকারি অধ্যাপক মো. রাকিবুল ইসলামের তত্ত্বাবধানে দ্বিতীয় বর্ষের ‘রুরাল ডেভেলপমেন্ট’ কোর্সের ফিল্ড ট্যুরের উদ্দেশ্যেই সরেজমিনে কক্সবাজার সমুদ্রসৈকত ভ্রমণে আসে শিক্ষার্থীরা।

প্রায় ১১ ঘন্টা বাস ভ্রমন শেষে পরদিন সকাল দশটার দিকে কক্সবাজারের ‘কলাতলি সি বিচে’ পৌঁছায় শিক্ষার্থীরা। এরপর ‘ওয়ার্ল্ড সি বিচ’ রিসোর্টে চেক ইন করার পর সকলে ছুটে যান সমুদ্রসৈকতে। সমুদ্রের ঢেউয়ের স্রোতের কলকলানি, পাখির কিচিরমিচির শব্দ যেনো হৃদয়কে পুলকিত করে তোলে তাদের। সমুদ্রের লোনা পানিতে ঢেউয়ের সাথে অনেকক্ষণ শরীর দুলিয়ে গোসল করে শিক্ষার্থীরা। সন্ধ্যার আগের লাল আভা সূর্য দেখার জন্য বিকেলে আবারো সকলে সমুদ্রসৈকতে ছুটে যান। গিয়েই বড় আকৃতির রক্তিম সূর্যের অস্ত যাওয়া উপভোগ করেন শিক্ষার্থীরা। 

কক্সবাজার ভ্রমণ শেষে শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা পরদিন সকালে আবার রওনা হন বান্দরবানের উদ্দেশ্য। বান্দরবানে পাহাড় কাটা আঁকাবাঁকা রাস্তার চারপাশের পরিবেশ দেখে চোখ জুড়িয়ে যায় তাদের। 

অনুভূতি প্রকাশ করে শিক্ষার্থী ইশরাক রাইয়ান বলেন, 'প্রকৃতির যে অপরূপ সৌন্দর্য রয়েছে তা কক্সবাজারে এলেই উপলব্ধি করা যায় আরো ভালোভাবে। এছাড়া বান্দরবানের মেঘলা, নীলাচল, নীলগিরি পর্যটনকেন্দ্রগুলোতে মানুষের ভীড় বলে দেয় এখানের সৌন্দর্যের কথা। এখানে অনেক উঁচু উঁচু পাহাড়ের সমারোহ দেখে চোখ জুড়িয়ে যায়'।

বিশ্ববিদ্যালয়ের স্থানীয় সরকার ও নগর উন্নয়ন বিভাগের বিভাগীয় প্রধান ও সহকারি অধ্যাপক মো. রাকিবুল ইসলাম বলেন, 'প্রতিবছর ছাত্রছাত্রীরা তাদের ‘রুরাল ডেভেলপমেন্ট’ কোর্সের অধীনে ফিল্ড ভিজিটে আসে। আমরা চেষ্টা করি বিভিন্ন জায়গায় যে ‘প্লেস বেইজড ডেভেলপমেন্ট’ হচ্ছে, সেগুলো সম্পর্কে শিক্ষার্থীদের ধারণা দিতে। পর্যটন নগরী কক্সবাজার সমুদ্রসৈকতকে ঘিরে যে ডেভেলপমেন্ট হচ্ছে, সে সম্পর্কে ধারণা দেওয়ার জন্যই শিক্ষার্থীদেরকে নিয়ে এসেছি। ছাত্রছাত্রীদের অনেকেই প্রথমবারের মতো সমুদ্র দেখেছে। তাদের যে উল্লাস, যে অনুভূতি, তাদের অবাক বিষ্ময়কর চোখ আমাকে প্রচুর আনন্দ দিয়েছে। আমি চাই, তারা বাস্তব অভিজ্ঞতা অর্জন করুক। এই অভিজ্ঞতাকে কাজে লাগিয়ে তারা অনেকদূর এগিয়ে যাক'।

স্থানীয় সরকার ও নগর উন্নয়ন বিভাগের চতুর্থ ব্যাচের শিক্ষার্থী সিফাত তাসনিম মিতু বলেন, 'আমি জীবনের প্রথম এতো সুন্দর একটি জায়গায় এসেছি। আমার সারাদিনেও মন ভরেনি সমুদ্রের ঢেউয়ের কলকলানি গান শুনে। আমি আবারো আসতে চাই কক্সবাজার সমুদ্রসৈকতে। আপন মনে খানিকটা সময় নিজের করে নিয়ে এই সমুদ্রসৈকতের সৌন্দর্য উপভোগ করতে'।

[টিবিএন৭১/এসএস]